মানবতা হারিয়ে গেছে। পশু যেমন চোখে শুধু মাংস দেখে তেমনি মানুষ দেখে টাকা আর ক্ষমতা।
ওরাও সালাম, রফিক, জব্বার। ওরাও রাজপথে নেমেছে সমস্ত মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে। যেমন নেমেছিলো হাজারো মায়ের সন্তান মাতৃ ভাষার দাবিতে। সেদিনও পুলিশের গুলিতে আহত ও নিহত ছাত্রসমাজ আজও পুলিশের শক্তি থামাতে পারেনি তরুণের প্রতিবাদ।
লোকাল বাসে চলার কিছু Advantage আছে। নানান শ্রেণীর মানুষের সাথে Interaction হয়। খুব কাছে থেকে নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে observe করা যায়। যেমন, কিছুদিন আগে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অনেক ভিড়ের মাঝে কষ্টে বাসে উঠেছি। কিছু মানুষ বলছিলো একটু কষ্ট হলেও পরীক্ষার্থীদের তুলে নিতে। অন্যদিকে কিছু আঙ্কেলের মন্তব্য ছিলো এমন যে, ছাত্ররা উঠে বাসে ঝামেলা করে। এরাতো পড়াশোনা করে না, সারাদিন মেয়ে নিয়ে ঘোরে, গাজা খায়, আর নেশাপানি করে। একজন বলছিলো ভাই চাকরিজীবীরা বাস miss করলে চাকরি চলে যাবে। আর এসব পোলাপান exam miss করলেও সামনের বছর দিতে পারবে। পড়াতো লাগেই না, সারাদিন মেয়ে নিয়ে ঘোরে। আর পরীক্ষায় পাশ করতে পড়া লাগে না প্রশ্নপত্রতো ফাঁস হবেই, এখনকার যুগে পড়া লাগে না, প্রেম করলেই হয়।
চায়ের দোকান বা লোকাল বাসের অভিজ্ঞতা সত্যিই ভয়ানক। সংখ্যালঘু যৌক্তিক কথা বল্লেও সংখ্যাগরিষ্ঠই অযৌক্তিক কথা বলে "এখনকার যুগের আঙ্কেলরা।" কিছুদিন আগের কথা, এক ব্যাংকার বাসে বসে পাশের সিটের যাত্রীর কাধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। যাত্রী যতবারই সরিয়ে দিচ্ছে সে আবারও একই কাজ করছে। যখন যাত্রী রেগে গেলো তখন ব্যাংকার সাহেব আরো বেশী রেগে গেলো। যাত্রীদের মাঝে কেউ ব্যংকারকে সাপোর্ট করছে কেউ বা অপর যাত্রীটিকে। তাদের মাঝে ব্যংকারকে সাপোর্ট করা এক যাত্রী প্রচণ্ড রেগে বলে ব্যাংকার সাহেব সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত, আর বাসায়তো পুরুষ মানুষ একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারেনা, বাসে একটু ঘুমাচ্ছে তাকে Disturb কেন করছে। উল্টো তাকে কাধ পেতে দিয়ে নড়াচড়া না করে বসে থাকলোনা কেন? মানবতা নাই নাকি?
এইযে মানুষগুলো কথা বলছে, যা ইচ্ছা তাই বলছে এর কারণ হল ওদের সবার বাক্-স্বাধীনতা আছে, তাই না ভেবেই বলা যায়। যিনি বলছেন ব্যাংকার সাহেব ক্লান্ত তাই কাধ পেতে নড়াচড়া না করে রোবটের মত বসে থাকতে হবে, তিনি কি একবারও জানতে চেয়েছে অপর ব্যক্তিটির কাছে, যে সে সারাদিন কোথায় ছিলো? কোথা থেকে আসছে? সে যে ব্যাংকার সাহেবের চেয়ে বেশী ক্লান্ত না, বা মানসিক অশান্তিতে নেই তা আপনি আমি কি জানি যে মন্তব্য করে দিলাম। আর বিবাহিত হলেও বাসায় শান্তিতে ঘুমানো যায়না বলে কি প্রমান করছি না যে নারী মমতাময়ী নয়, বিষধর সাপ। এমন ধারণা মনে পোষণ করার কারনেই শান্তিটা নাই, যোগ্যতা থাকলে নারীর আদর ভালোবাসা নিংড়ে নেওয়া যায়।
যে ব্যক্তিটি বলছে কাজে না গেলে চাকরী চলে যাবে। পরীক্ষা না দিতে পারলে কি আর হবে একটা বছরইতো নষ্ট হবে। জানা নাই তিনি একটি বছরের মানে বোঝে কিনা। এক ঘন্টা আর এক বছরকে গুলিয়ে ফেল্লেতো আবার সমস্যা। যানজটে বসে থাকা সময়ে ভালো কিছু না ভেবে গালাগালিতে সময় ব্যয় করা মানুষ এক বাক্যে ছাত্ররা দেশের কুলাঙ্গার বলার আগে ভাবেনা দেশের স্বাধীনতায় কাদের অবদান সবচেয়ে বেশী। পার্কে বা চিপাচাপায় প্রেম করা অপরাধ যারা বোঝে তারা কেন বোঝে না সে প্রেম দেখে মজা নেওয়াও অপরাধ। সচেতন নাগরিক এড়িয়ে না চলে অসম প্রেম দেখলে বাধা দেবে, ও তাদের সঠিক পথ দেখেবে। এমনটা হলে রাস্তায় এমন দৃশ্য আর দেখাই যাবে না। রাস্তায় ময়লা দেখলে "ঐ দেখ রাস্তায় ময়লা পড়ে আছে, এই দেশ নোংরা বলে সাইড দিয়ে হেটে চলে গিয়ে পরের দিনও একই ময়লা দেখতে পাই আর একই কথা বলি।" দায়িত্ব ভেবে পরিষ্কার করলেতো দেশটা সোনার দেশ হয়ে যায়। পরিবর্তন চাই, ভালো কিছু চাই, কিন্তু তা অন্য কেউ করে দিয়ে যাক।
রাস্তায় যানজট, কেন? যদি হয় মন্ত্রী যাচ্ছে, এক ঝলক দেখার চেষ্টা করি অথছ কোটা সংস্কারের জন্য অবরোধে মন্তব্য করি "পোলাপান বাল পাকনা হলে যা হয়," বলার আগে ভাবিনা পোলানতো আমিও ছিলাম, আমার ঘরেও আছে। আমিও চাকরী সমস্যায় ভুগেছি কিছুদিন পর আমার সন্তানও নামবে চাকরীর সন্ধানে। বাসে বসে যে ব্যাক্তিকে এটা বলতে শুনেছি সে কেন ভাবে না? হয়তো তার একটা কানা বা খোঁড়া টাইপের সার্টিফিকেট হলেই হবে, লবিং রেডি আছে চাকরি হয়ে যাবে।
একটা কথা মাথায় কেন থাকে না যে আজ ছাত্রদের আন্দোলনকে কাজের ব্যাঘাত ভাবছি, বা অপ্রয়োজনীয় ভাবছি সেই নৌপরিবহন মন্ত্রী সাহেবের মত। তবে এটাও মাথায় রাখা উচিৎ মন্ত্রী সাহেব তার তিন ভাগ্নীর নিখোঁজ হওয়া বা মারা যাওয়ার খবরে কিন্তু কেঁদেছন। তার সন্তান মারা গেলে কিন্তু তার হাসিটা আসবেনা। আমারা সবাইতো মন্ত্রী না, আমরা কোন মানুষ মারা গেলে হাসতে পারিনা। আমাদের চোখে সামনে অনেকগুলো ছবি ভাসে, তার মাঝে সবচেয়ে বড় ছবিটি হল আমাদের নিজের বা নিজের প্রিয়জনদের। তাদেরও যে কাল এমন কিছু হবেনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
এই স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েগুলো কার জন্য রাস্তায় নেমেছে? ওরা রাস্তায় না নামলে দেশের সবাই এই সংবাদ জানতে পারতো কিনা সন্ধেহ আছে। ওদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা পথে নেমেছে কার স্বার্থে এটা ভাবার বিষয়। ওরা সবাইকি খুন হওয়া সেই ছাত্রছাত্রীদের চেনে? তাহলে কেন ঝুঁকি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে? আসলে ওরা জানে, ওরা বোঝে একটা প্রাণের মূল্য কতটুকু যা আমরা হয়তো অনেকে বুঝিনা, স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদ বা প্রশাসনের মানুষগুলো বোঝেনা। কিন্তু এই ছেলেমেয়েগুলো বোঝে যে আজ ওরা চুপ থাকলেও কাল ওদের পালা বা ওদের কোন প্রিয়জনের। আঙুল তোলার আগে ভাবিনা আমরাও ছাত্র ছিলাম, এখনো আমাদের প্রিয়জন ছাত্র আছে। Actually we need some food for thought. মস্তিষ্কে আমি, আমার, এই ধারণা নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবোনা বোঝার ক্ষমতা কবে হবে জানা নেই। যখন লাভ আমি আর আমার হবে ক্ষতিটাও আমি আর আমারই হবে। তখন কিন্তু আমরা খুব আশা করি কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াক।
হাজার হাজার বাস চালকদের ভাবা উচিৎ যে ওদেরও সন্তান আছে, সেই সন্তানকে কেই এভাবে হত্যা করলে বুক ওদেরও ফাটবে। ওদের সন্তানদের বোঝা উচিৎ ওদের বাবা অন্যায় করছে প্রতিনিয়ত রাস্তায়। আর সেই অন্যায়ের টাকায় ওদের খাবার আসছে, যে টাকায় আছে রক্তের ছাপ। একজন গাড়ী চালকের সন্তান এমন অন্যায়ভাবে খুন হলে কি করতো জানা নাই। সে কি তখন হাসি মুখে মেনে নিত? সাপোর্ট করতো তারই সমকর্মী/ জাতভাইদের? মন্ত্রী যদি শিক্ষিত হত তাহলে এই পেশায় শিক্ষিত লোকজনের প্রয়োজনীয়তা বুঝতো। যারা একটা জিবনের মূল্য বোঝার ক্ষমতা রাখেনা তাদের হাতে কোটি কোটি জীবন। অশিক্ষিত একজন ড্রাইভার এটুকুও হিসেব করতে পারে না যে রেসিং করে আগে গেলে কত টাকা বেশী পাবে সে? সেই টাকায় একটা আহত মানুষের চিকিৎসাও কি সম্ভব? একজন চালক যে মানুষটিকে হত্যা করলো তাকে কোটি টাকা দিয়ে কোন বাবা-মা যদি তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে বলে তার কি জবাব আছে এই খুনির কাছে জানা নেই। দেশের দায়িত্ব দেওয়ার আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি সমস্ত মানুষকে নিজের আপনজন ভাবতে না পারে তাহলে সে দেশের মানুষের নিরাপত্তা কখনোই থাকে না।
পুলিশ বাহিনীতে অযোগ্য লোকজনে ভরে গেছে। শিক্ষার প্রয়োজন হয়না, রাজনীতি করলে এমন ক্ষমতাধর পদগুলো পাওয়া যায়। পুলিশকে দোষীদের ভয় পেতে হয়না, অপরাধীদের আশ্রয়স্থল পুলিশ, আর সাধারণ জনগনের জন্য ভয়। কিছুদিন আগে এক বন্ধুর সাথে রোডের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। দুটি ছেলে এসে বলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি করেন? রেগে বললাম কি করি মানে? সে টেনে আমাকে রস্তা থেকে দূরে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের একটি গাড়ি আসলো তখন আর ওই ছেলে দুটির সাথে কানে কানে ও ইশারায় কিছু বলে ওদের পাটিয়ে দিলো। আমার আর আমার বান্ধবীর সমস্ত তথ্য নিলো। অনুরোধ করেছি সবকিছু যাচাই করতে তাও সেটি না করে উলটো ধমক দিলো বাসায় জানাবে আমাকে খারাফ কাজে ধরেছে। তাও ভয় পাইনি, বলেছি ফোন করেন সমস্যা নাই। তখন বলে বান্ধবীর স্বামীকে ফোন করে বলবে আমাদের অসংলগ্ন কাজে ধরেছে। তখন মেয়েটার জন্য ভাবনা হতে লাগলো। একটি হাজার টাকা নিলো তাও চোরের মত যেন কেউ না দেখে কারন মেইন রোডে দাঁড়ানো ছিলাম। যা করা উচিৎ ছিলো তা না করে উল্টোকাজ করে প্রমান করে দিলো তারা রাস্তায় নামে শুধুই ধান্দা করার লক্ষে। যখন একজন ছাত্রকে বলে পড়াশোনা পুটকির ভেতর দেবো তখনই বুঝতে পারি কতটুকু যোগ্য বাংলাদেশের পুলিশ। পুলিশের চেয়ে বাজে অবস্থা এখনকার নিউজ পরিপোর্টারদের। অযোগ্য লোকে ভরে গেছে এই গুরুত্বপূর্ণ পেশায়। টি, আর, পি আর টাকার জন্য ভুলে যায় ওদের সত্য উন্মোচন করাই হওয়া উচিৎ একমাত্র লক্ষ। তো-তো করে তোতলিয়ে যখন এরা একটি সংবাদকে ভিন্নরূপ দেওয়ার চেষ্টা করে তখন এরাও ভুলে যায় এদের পরিবার আছে, ভাই, বোন, সন্তান আছে তারাও নিরাপদ নয়।
একটি দুরঘটনার ফলে সৃষ্ট আন্দোলনকে Manipulate করার না করার অনুরোধ আপনাদের কাছে। খবরে যখন দেখি একজন রিপোর্টার যার অনর্গল শুদ্ধ বাংলা বলা উচিৎ, কিন্তু উ-আ করে ভুল উপস্থাপনের পাশাপাশি তথ্য ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করে তখন অসম্মান ছাড়া সম্মান আসে না। একটি মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে এই ছাত্রছাত্রীরা, বার বার যানজট ঘটিয়েছে বলা সময় টিভির সেই রিপোর্টারের কাছে অনুরোধ ভুল কিছু হাইলাইট করার চেষ্টা করবেন না।
মানবতার অবক্ষয় থেকে মুক্তি মিলছে না আমাদের। দিন দিন মানুষের মাঝে পশু সুলভ আচরণ বেড়ে যাচ্ছে। রাস্তায় যানজট সারাবছরই থাকে but now it's happening for a cause, and a human being with humanity will not try to drive it into wrong way. We should know the facts properly and take proper step for future. We shouldn't make money form everywhere.
নতুন কোন এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার মত ঘৃণ্য চেষ্টা না হোক সেই কামনাই করি।
ছাত্র, পুলিশ student, police |
লোকাল বাসে চলার কিছু Advantage আছে। নানান শ্রেণীর মানুষের সাথে Interaction হয়। খুব কাছে থেকে নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে observe করা যায়। যেমন, কিছুদিন আগে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অনেক ভিড়ের মাঝে কষ্টে বাসে উঠেছি। কিছু মানুষ বলছিলো একটু কষ্ট হলেও পরীক্ষার্থীদের তুলে নিতে। অন্যদিকে কিছু আঙ্কেলের মন্তব্য ছিলো এমন যে, ছাত্ররা উঠে বাসে ঝামেলা করে। এরাতো পড়াশোনা করে না, সারাদিন মেয়ে নিয়ে ঘোরে, গাজা খায়, আর নেশাপানি করে। একজন বলছিলো ভাই চাকরিজীবীরা বাস miss করলে চাকরি চলে যাবে। আর এসব পোলাপান exam miss করলেও সামনের বছর দিতে পারবে। পড়াতো লাগেই না, সারাদিন মেয়ে নিয়ে ঘোরে। আর পরীক্ষায় পাশ করতে পড়া লাগে না প্রশ্নপত্রতো ফাঁস হবেই, এখনকার যুগে পড়া লাগে না, প্রেম করলেই হয়।
চায়ের দোকান বা লোকাল বাসের অভিজ্ঞতা সত্যিই ভয়ানক। সংখ্যালঘু যৌক্তিক কথা বল্লেও সংখ্যাগরিষ্ঠই অযৌক্তিক কথা বলে "এখনকার যুগের আঙ্কেলরা।" কিছুদিন আগের কথা, এক ব্যাংকার বাসে বসে পাশের সিটের যাত্রীর কাধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। যাত্রী যতবারই সরিয়ে দিচ্ছে সে আবারও একই কাজ করছে। যখন যাত্রী রেগে গেলো তখন ব্যাংকার সাহেব আরো বেশী রেগে গেলো। যাত্রীদের মাঝে কেউ ব্যংকারকে সাপোর্ট করছে কেউ বা অপর যাত্রীটিকে। তাদের মাঝে ব্যংকারকে সাপোর্ট করা এক যাত্রী প্রচণ্ড রেগে বলে ব্যাংকার সাহেব সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত, আর বাসায়তো পুরুষ মানুষ একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারেনা, বাসে একটু ঘুমাচ্ছে তাকে Disturb কেন করছে। উল্টো তাকে কাধ পেতে দিয়ে নড়াচড়া না করে বসে থাকলোনা কেন? মানবতা নাই নাকি?
এইযে মানুষগুলো কথা বলছে, যা ইচ্ছা তাই বলছে এর কারণ হল ওদের সবার বাক্-স্বাধীনতা আছে, তাই না ভেবেই বলা যায়। যিনি বলছেন ব্যাংকার সাহেব ক্লান্ত তাই কাধ পেতে নড়াচড়া না করে রোবটের মত বসে থাকতে হবে, তিনি কি একবারও জানতে চেয়েছে অপর ব্যক্তিটির কাছে, যে সে সারাদিন কোথায় ছিলো? কোথা থেকে আসছে? সে যে ব্যাংকার সাহেবের চেয়ে বেশী ক্লান্ত না, বা মানসিক অশান্তিতে নেই তা আপনি আমি কি জানি যে মন্তব্য করে দিলাম। আর বিবাহিত হলেও বাসায় শান্তিতে ঘুমানো যায়না বলে কি প্রমান করছি না যে নারী মমতাময়ী নয়, বিষধর সাপ। এমন ধারণা মনে পোষণ করার কারনেই শান্তিটা নাই, যোগ্যতা থাকলে নারীর আদর ভালোবাসা নিংড়ে নেওয়া যায়।
যে ব্যক্তিটি বলছে কাজে না গেলে চাকরী চলে যাবে। পরীক্ষা না দিতে পারলে কি আর হবে একটা বছরইতো নষ্ট হবে। জানা নাই তিনি একটি বছরের মানে বোঝে কিনা। এক ঘন্টা আর এক বছরকে গুলিয়ে ফেল্লেতো আবার সমস্যা। যানজটে বসে থাকা সময়ে ভালো কিছু না ভেবে গালাগালিতে সময় ব্যয় করা মানুষ এক বাক্যে ছাত্ররা দেশের কুলাঙ্গার বলার আগে ভাবেনা দেশের স্বাধীনতায় কাদের অবদান সবচেয়ে বেশী। পার্কে বা চিপাচাপায় প্রেম করা অপরাধ যারা বোঝে তারা কেন বোঝে না সে প্রেম দেখে মজা নেওয়াও অপরাধ। সচেতন নাগরিক এড়িয়ে না চলে অসম প্রেম দেখলে বাধা দেবে, ও তাদের সঠিক পথ দেখেবে। এমনটা হলে রাস্তায় এমন দৃশ্য আর দেখাই যাবে না। রাস্তায় ময়লা দেখলে "ঐ দেখ রাস্তায় ময়লা পড়ে আছে, এই দেশ নোংরা বলে সাইড দিয়ে হেটে চলে গিয়ে পরের দিনও একই ময়লা দেখতে পাই আর একই কথা বলি।" দায়িত্ব ভেবে পরিষ্কার করলেতো দেশটা সোনার দেশ হয়ে যায়। পরিবর্তন চাই, ভালো কিছু চাই, কিন্তু তা অন্য কেউ করে দিয়ে যাক।
রাস্তায় যানজট, কেন? যদি হয় মন্ত্রী যাচ্ছে, এক ঝলক দেখার চেষ্টা করি অথছ কোটা সংস্কারের জন্য অবরোধে মন্তব্য করি "পোলাপান বাল পাকনা হলে যা হয়," বলার আগে ভাবিনা পোলানতো আমিও ছিলাম, আমার ঘরেও আছে। আমিও চাকরী সমস্যায় ভুগেছি কিছুদিন পর আমার সন্তানও নামবে চাকরীর সন্ধানে। বাসে বসে যে ব্যাক্তিকে এটা বলতে শুনেছি সে কেন ভাবে না? হয়তো তার একটা কানা বা খোঁড়া টাইপের সার্টিফিকেট হলেই হবে, লবিং রেডি আছে চাকরি হয়ে যাবে।
একটা কথা মাথায় কেন থাকে না যে আজ ছাত্রদের আন্দোলনকে কাজের ব্যাঘাত ভাবছি, বা অপ্রয়োজনীয় ভাবছি সেই নৌপরিবহন মন্ত্রী সাহেবের মত। তবে এটাও মাথায় রাখা উচিৎ মন্ত্রী সাহেব তার তিন ভাগ্নীর নিখোঁজ হওয়া বা মারা যাওয়ার খবরে কিন্তু কেঁদেছন। তার সন্তান মারা গেলে কিন্তু তার হাসিটা আসবেনা। আমারা সবাইতো মন্ত্রী না, আমরা কোন মানুষ মারা গেলে হাসতে পারিনা। আমাদের চোখে সামনে অনেকগুলো ছবি ভাসে, তার মাঝে সবচেয়ে বড় ছবিটি হল আমাদের নিজের বা নিজের প্রিয়জনদের। তাদেরও যে কাল এমন কিছু হবেনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
Bus accident in kurmitola |
এই স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েগুলো কার জন্য রাস্তায় নেমেছে? ওরা রাস্তায় না নামলে দেশের সবাই এই সংবাদ জানতে পারতো কিনা সন্ধেহ আছে। ওদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা পথে নেমেছে কার স্বার্থে এটা ভাবার বিষয়। ওরা সবাইকি খুন হওয়া সেই ছাত্রছাত্রীদের চেনে? তাহলে কেন ঝুঁকি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে? আসলে ওরা জানে, ওরা বোঝে একটা প্রাণের মূল্য কতটুকু যা আমরা হয়তো অনেকে বুঝিনা, স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদ বা প্রশাসনের মানুষগুলো বোঝেনা। কিন্তু এই ছেলেমেয়েগুলো বোঝে যে আজ ওরা চুপ থাকলেও কাল ওদের পালা বা ওদের কোন প্রিয়জনের। আঙুল তোলার আগে ভাবিনা আমরাও ছাত্র ছিলাম, এখনো আমাদের প্রিয়জন ছাত্র আছে। Actually we need some food for thought. মস্তিষ্কে আমি, আমার, এই ধারণা নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবোনা বোঝার ক্ষমতা কবে হবে জানা নেই। যখন লাভ আমি আর আমার হবে ক্ষতিটাও আমি আর আমারই হবে। তখন কিন্তু আমরা খুব আশা করি কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াক।
হাজার হাজার বাস চালকদের ভাবা উচিৎ যে ওদেরও সন্তান আছে, সেই সন্তানকে কেই এভাবে হত্যা করলে বুক ওদেরও ফাটবে। ওদের সন্তানদের বোঝা উচিৎ ওদের বাবা অন্যায় করছে প্রতিনিয়ত রাস্তায়। আর সেই অন্যায়ের টাকায় ওদের খাবার আসছে, যে টাকায় আছে রক্তের ছাপ। একজন গাড়ী চালকের সন্তান এমন অন্যায়ভাবে খুন হলে কি করতো জানা নাই। সে কি তখন হাসি মুখে মেনে নিত? সাপোর্ট করতো তারই সমকর্মী/ জাতভাইদের? মন্ত্রী যদি শিক্ষিত হত তাহলে এই পেশায় শিক্ষিত লোকজনের প্রয়োজনীয়তা বুঝতো। যারা একটা জিবনের মূল্য বোঝার ক্ষমতা রাখেনা তাদের হাতে কোটি কোটি জীবন। অশিক্ষিত একজন ড্রাইভার এটুকুও হিসেব করতে পারে না যে রেসিং করে আগে গেলে কত টাকা বেশী পাবে সে? সেই টাকায় একটা আহত মানুষের চিকিৎসাও কি সম্ভব? একজন চালক যে মানুষটিকে হত্যা করলো তাকে কোটি টাকা দিয়ে কোন বাবা-মা যদি তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে বলে তার কি জবাব আছে এই খুনির কাছে জানা নেই। দেশের দায়িত্ব দেওয়ার আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি সমস্ত মানুষকে নিজের আপনজন ভাবতে না পারে তাহলে সে দেশের মানুষের নিরাপত্তা কখনোই থাকে না।
পুলিশ বাহিনীতে অযোগ্য লোকজনে ভরে গেছে। শিক্ষার প্রয়োজন হয়না, রাজনীতি করলে এমন ক্ষমতাধর পদগুলো পাওয়া যায়। পুলিশকে দোষীদের ভয় পেতে হয়না, অপরাধীদের আশ্রয়স্থল পুলিশ, আর সাধারণ জনগনের জন্য ভয়। কিছুদিন আগে এক বন্ধুর সাথে রোডের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। দুটি ছেলে এসে বলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি করেন? রেগে বললাম কি করি মানে? সে টেনে আমাকে রস্তা থেকে দূরে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের একটি গাড়ি আসলো তখন আর ওই ছেলে দুটির সাথে কানে কানে ও ইশারায় কিছু বলে ওদের পাটিয়ে দিলো। আমার আর আমার বান্ধবীর সমস্ত তথ্য নিলো। অনুরোধ করেছি সবকিছু যাচাই করতে তাও সেটি না করে উলটো ধমক দিলো বাসায় জানাবে আমাকে খারাফ কাজে ধরেছে। তাও ভয় পাইনি, বলেছি ফোন করেন সমস্যা নাই। তখন বলে বান্ধবীর স্বামীকে ফোন করে বলবে আমাদের অসংলগ্ন কাজে ধরেছে। তখন মেয়েটার জন্য ভাবনা হতে লাগলো। একটি হাজার টাকা নিলো তাও চোরের মত যেন কেউ না দেখে কারন মেইন রোডে দাঁড়ানো ছিলাম। যা করা উচিৎ ছিলো তা না করে উল্টোকাজ করে প্রমান করে দিলো তারা রাস্তায় নামে শুধুই ধান্দা করার লক্ষে। যখন একজন ছাত্রকে বলে পড়াশোনা পুটকির ভেতর দেবো তখনই বুঝতে পারি কতটুকু যোগ্য বাংলাদেশের পুলিশ। পুলিশের চেয়ে বাজে অবস্থা এখনকার নিউজ পরিপোর্টারদের। অযোগ্য লোকে ভরে গেছে এই গুরুত্বপূর্ণ পেশায়। টি, আর, পি আর টাকার জন্য ভুলে যায় ওদের সত্য উন্মোচন করাই হওয়া উচিৎ একমাত্র লক্ষ। তো-তো করে তোতলিয়ে যখন এরা একটি সংবাদকে ভিন্নরূপ দেওয়ার চেষ্টা করে তখন এরাও ভুলে যায় এদের পরিবার আছে, ভাই, বোন, সন্তান আছে তারাও নিরাপদ নয়।
একটি দুরঘটনার ফলে সৃষ্ট আন্দোলনকে Manipulate করার না করার অনুরোধ আপনাদের কাছে। খবরে যখন দেখি একজন রিপোর্টার যার অনর্গল শুদ্ধ বাংলা বলা উচিৎ, কিন্তু উ-আ করে ভুল উপস্থাপনের পাশাপাশি তথ্য ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করে তখন অসম্মান ছাড়া সম্মান আসে না। একটি মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে এই ছাত্রছাত্রীরা, বার বার যানজট ঘটিয়েছে বলা সময় টিভির সেই রিপোর্টারের কাছে অনুরোধ ভুল কিছু হাইলাইট করার চেষ্টা করবেন না।
মানবতার অবক্ষয় থেকে মুক্তি মিলছে না আমাদের। দিন দিন মানুষের মাঝে পশু সুলভ আচরণ বেড়ে যাচ্ছে। রাস্তায় যানজট সারাবছরই থাকে but now it's happening for a cause, and a human being with humanity will not try to drive it into wrong way. We should know the facts properly and take proper step for future. We shouldn't make money form everywhere.
নতুন কোন এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার মত ঘৃণ্য চেষ্টা না হোক সেই কামনাই করি।